যােগাযােগ ও যােগাযােগ দক্ষতার মূল ধারনা

যােগাযােগ ও যােগাযােগ দক্ষতার মূল ধারনা

তথ্য বাংলা

যােগাযােগ কী? যােগাযােগের ধরনঃ

যােগাযােগ হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনাে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছার জন্য কোনাে তথ্য, দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুভূতি আদান-প্রদান করা যায় । কার্যকরী যােগাযােগের জন্য যােগাযােগকারীকে বার্তা বা তথ্য দিলেই চলবে না, প্রতিবার্তা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যােগাযােগ দুই ধরনেরঃ

(১) আন্ত:ব্যক্তিক যােগাযােগ ও

(২) গণযােগাযােগ।

আন্ত:ব্যক্তিক যােগাযােগ দুইজনের মধ্যে হলে তাকে “একক যােগাযােগ“ এবং কোনাে দলের সাথে হলে তাকে “দলীয় যােগাযােগ” বলে।

কার্যকরী যােগাযােগের দক্ষতাসমূহঃ

ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করা:

• মা-বাবা / অভিভাবককে অভ্যর্থনা / সালাম বা আদাব জানান;

• কুশল বিনিময় সহ কথাবার্তা শুরু করা;

•প্রয়ােজনবােধে নাম অথবা উপাধি যথাযথভাবে ব্যবহার করা, যেমন – মেম্বার সাহেব, ইমাম সাহেব, মৌলভী সাহেব, মাস্টার সাহেব ইত্যাদি।

শোনাঃ

• সামনাসামনি আলােচনার সময় চোখে চোখ রেখে কথা বলা; ০ আলোচনায় বাধা না দেয়া;

• ভুল বলেছেন বলে বকাবকি করা, ধমকের সুরে পরামর্শ দেয়া বা নিষেধ করা থেকে বিরত থাকা;

• মৌখিকভাবে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে আলােচনায় উৎসাহ দেয়া;

• কোনাে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা বা মন্তব্য করার আগে কথার সার-বস্তু বুঝে নেয়া।

প্রশ্ন করাঃ

• পূর্ণ জবাব পাওয়ার জন্য খােলা-মেলা প্রশ্ন করা;

• যেকোন প্রশ্নের হ্যা বা না উত্তরের পরে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য প্রয়ােজনীয় পন্থা ব্যবহার করা।  (যেমন – আরাে বেশি খােলা-মেলা প্রশ্ন করা, আরাে তথ্য জানতে চাওয়া ইত্যাদি)

• অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন পরিহার করা।

বার্তা সরবরাহ করাঃ

• সঠিক এবং সম্পূর্ণ তথ্য সরবরাহ করা;

• সহজ ভাষা ব্যবহার করা (সম্ভব হলে স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা);

• চিকিৎসা-বিজ্ঞানের কারিগরি পরিভাষা বা শব্দগুলি পরিহার করে কথা বলা;

• বাবা-মা’র কাছে গুরুত্বপূর্ণ এমন বিষয়ে অগ্রাধিকারভিত্তিতে তথ্য প্রদান করা;

• কমিউনিটি থেকে ইতিবাচক উদাহরণ ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয় ।

বিসিসি উপকরণ ব্যবহারঃ

•অংশগ্রহণকারীদেরকে প্রদর্শনের জন্য উপকরণগুলি সঠিক জায়গায় রাখা বা ধরা যাতে সকল অংশগ্রহণকারী। ঠিকভাবে দেখতে পান;

• খােলা-মেলা প্রশ্ন করে অংশগ্রহণকারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;

• প্রাসঙ্গিক উপকরণ ব্যবহার করা;

• চোখে চোখ রেখে কথা বলা;

• বিসিসি উপকরণগুলির বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগে থেকেই ভালভাবে জেনে নেয়া।

যোগাযোগ চক্রঃ

সফল যােগাযােগকারীর গুণাবলী ও দক্ষতাঃ

ভাষাঃ- সহজবােধ্য, অর্থপূর্ণ এবং উৎসাহব্যঞ্জক ভাষা ব্যবহার করা। সম্ভব হলে স্থানীয় বা আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা । উদাহরণস্বরুপ কোনাে কোনাে এলাকায় ‘ডায়রিয়া রােগটি, ‘পেটনামা’ বা ‘পেটখারাপ’ বলে প্রচলিত।

স্বতন্ত্র ধ্যান-ধারণাঃ- কার্যকরী যােগাযােগ প্রতিষ্ঠার জন্য অপরের ধ্যান-ধারণা বিবেচনা করে তথ্য ও বার্তাগুলি কমিউনিটির সামনে তুলে ধরা । এআরআই বা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে কী করণীয় সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা। একজন চিকিৎসকের ধারণা হতে ভিন্ন হতে পারে। সুতরাং, স্বাস্থ্যকর্মী যখন পরিবারের সদস্যদের এআরআই এর চিকিৎসা সম্বন্ধে বলবেন তখন তাদের ধ্যান-ধারণার সঙ্গে একটা যােগসূত্র রেখেই সঠিক পরামর্শটি দিবেন।

অভিজ্ঞতাঃ- কোনাে বিষয়ে নিজস্ব অভিজ্ঞতা থাকলে মানুষ সহজেই সেগুলিকে বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত করতে

পারে । অভিজ্ঞতার আলােকে স্থানীয় উদাহরণ ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকর্মী যে কোন বিষয় সহজে বুঝিয়ে বলতে পারে ।

আচরণঃ- স্বাস্থ্যকর্মীর নিজস্ব মনােভাব মা ও অভিভাবকের সাথে যােগাযােগ সৃষ্টির বেলায় প্রভাব ফেলে। নম্রতা, হাসিখুশি থাকা এবং সহানুভূতিশীল আচরণ ইত্যাদি গুণাবলী সফল যােগাযােগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।