মোবাইল এবং আপনার সকল তথ্য সুরক্ষিত রাখতে চালু রাখুন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সেটিং

মোবাইল এবং আপনার সকল তথ্য সুরক্ষিত রাখতে চালু রাখুন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সেটিং

বাংলা Information তথ্য

আপনার অ্যানড্রয়েড স্মার্টফোনে এমনই কিছু সেটিংস রয়েছে, যেগুলো একবার চালু করলেই হ্যাকারকে কয়েক ক্রোশ দূরে রাখতে পারবেন। বর্তমানে প্রতিনিয়তই স্মার্টফোনের মাধ্যমে অনেকেই হ্যাকিং এর শিকার হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবহারকারীদের অনেক গোপন তথ্য নিজেদের অজান্তেই চলে যাচ্ছে অন্যজনের নিয়ন্ত্রণে। তাই এ পরিস্থিতি লাঘবে মোবাইল এবং আপনার সকল তথ্য সুরক্ষিত রাখতে চালু রাখুন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সেটিং।

স্ক্রিন লকঃ

স্মার্টফোন অথবা ট্যাবলেটকে সুরক্ষিত রাখতে সব সময় স্ক্রিন লক ব্যবহার করুন। চাইলে পিন, প্যাটার্ন ও পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে আপনি নিজের স্মার্টফোনকে সুরক্ষিত করতে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেস আনলকের মতো বায়োমেট্রিক পদ্ধতিও।

লক স্ক্রিন নোটিফিকেশনঃ

ফোন লকড থাকলে লক স্ক্রিনে কোন কোন নোটিফিকেশন দেখা যাবে তাও বেছে নেওয়া সম্ভব। আপনি চাইলে লক স্ক্রিনে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপের নোটিফিকেশন দেখার ব্যবস্থা করে, বাকি নোটিফিকেশন লক স্ক্রিন থেকে সরিয়ে রাখতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে যেতে হবে ফোনের অ্যাপ সেটিংসে। নির্দিষ্ট অ্যাপ সার্চ করে, সেই অ্যাপে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে, এই ফিচার সম্পূর্ণভাবে কাজ করার জন্য ফোনে অ্যানড্রয়েড ১১ অপারেটিং সিস্টেম প্রয়োজন হবে।

স্মার্ট লকঃ

একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ফোন আনলকড রাখতে ব্যবহার করুন স্মার্ট লক। নির্দিষ্ট কোনো ব্লুটুথ ডিভাইসের সঙ্গে কানেক্টেড থাকলে অথবা নির্দিষ্ট কোনো লোকেশনে থাকলে আপনাকে একবারই পাসওয়ার্ড অথবা পিন ব্যবহার করে ফোন আনলক করতে হবে। এর পরে আপনার ফোন যতক্ষণ স্মার্টলকের শর্ত মেনে চলবে, ততক্ষণ তা আর লক হবে না। তবে, ৪ ঘণ্টা ফোন ব্যবহার না করলে অথবা ফোন রিস্টার্ট করলে তা ফের লক হয়ে যাবে। শুধুমাত্র অ্যানড্রয়েড ১০ ও ১১ গ্রাহকরা এই ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন।

পাসওয়ার্ডঃ

গুগল অ্যাকাউন্টের কোনও পাসওয়ার্ড প্রকাশ্যে এসেছে কি না, তা জানতে পারবেন গ্রাহকরা। কম্পিউটারে ব্রাউজার থেকে passwords.google.com ওপেন করে নিজের অ্যাকাউন্টে সাইন-ইনের পরে সিলেক্ট চেক পাসওয়ার্ড সিলেক্ট করে পাসওয়ার্ড প্রকাশ্যে এসেছে কি না জেনে নিতে পারবেন। পাসওয়ার্ড সিঙ্ক অন করে কোনও ওয়েবসাইটে লগ ইন করলে, আপনার সব পাসওয়ার্ড নিজে থেকে গুগল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সিঙ্ক হয়ে যায়।

গুগল-প্লে প্রোটেক্টঃ

প্লে স্টোর থেকে যে কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করলে তা ইনস্টল হওয়ার আগে প্লে প্রোটেক্টের মাধ্যমে তা পরীক্ষা করে গুগল। ডিভাইসে কোনো ক্ষতিকর অ্যাপ ইনস্টলড থাকলেও গ্রাহককে সতর্ক করে এই ফিচার। সব ক্ষতিকারক অ্যাপ নিজে থেকেই ফোন থেকে ডিলিট করে দেয় প্লে প্রোটেক্ট। এছাড়া, কোনো অ্যাপ গুগলের সফটওয়্যার পলিসি না মানলে সে বিষয়েও সতর্ক করে এই ফিচার। গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো অ্যাপ যদি নিঃশব্দে ফোনের কোন পার্মিশন ইনেবল করে সেই বিষয়েও গ্রাহককে সতর্ক করা হয়। যেকোনো অ্যানড্রয়েড ফোনে এই ফিচার প্রথম থেকেই ইনেবলড থাকে। সেটিংস> সিকিউরিটি>গুগল প্লে প্রটেক্ট ওপেন করে এই ফিচার ইনেবল করা যায়।

সেইফ ব্রাউজিংঃ

অ্যানড্রয়েড ডিভাইসের ডিফল্ট ব্রাউজার ক্রোম। এই ব্রাউজারে রয়েছে সেইফ ব্রাউজিং মুড। এটি ইনেবলড থাকলে ক্ষতিকারক কোনো ওয়েবসাইটে লগ-ইন করার আগে সতর্ক করে দেওয়া হয়। অবশ্যই এই ফিচার ইনেবলড করে রাখুন। তার জন্য গুগল ক্রোম ওপেন করে, ডান দিকে উপরে থ্রি ডট মেনু সিলেক্ট করে, সেটিংস সিলেক্ট করুন। এবার সিঙ্ক ফর গুগল সার্ভিস অপশনটি বেছে নিন।

সিকিউরিটি চেক আপঃ

নিয়মিত সিকিউরিটি চেক আপ করেও গুগল অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখা যায়। ধাপে ধাপে অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার বিভিন্ন উপায় বলে এই ফিচার। এখানে ‘Your devices’, ‘Recent security events’, ‘Third-party access’ ও ‘Sign-in & recovery’ বিভাগে গিয়ে আলাদা আলাদা করে সুরক্ষার সমীক্ষা করতে পারবেন। এখানে হলুদ ডট দেখালে বুঝবেন, আপনার অ্যাকাউন্টের ফোনের সুরক্ষায় সমস্যা রয়েছে। সবুজ চিহ্ন দেখানোর অর্থ সুরক্ষায় কোনো গাফিলতি নেই।

অ্যাপ পার্মিশনঃ

আপনার গুগল অ্যাকাউন্টের কোনো তথ্য থার্ড পার্টি অ্যাপ সংগ্রহ করছে তা দেখে নিন এই ফিচারের মাধ্যমে। এমন কোনও অ্যাপ অথবা সার্ভিসে যদি আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য শেয়ার করা হয় যা আপনি দীর্ঘদিন ব্যবহার করেন না, সেই অ্যাপ অথবা সার্ভিসের সঙ্গে ডেটা শেয়ার বন্ধ করে দিন। এর ফলে আপনার অ্যাকাউন্টের ডেটা সেই অ্যাপ আর না পেলেও পুরনো ডেটা ডিলিট করার জন্য আপনাকে পৃথক আবেদন জানাতে হবে।

ফাইন্ড মাই ডিভাইসঃ

অ্যানড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার ব্যবহার করে আপনি হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোনও খুঁজে পাবেন। কিন্তু, এই ফিচার ব্যবহারের জন্য আপনাকে তা সঠিকভাবে কনফিগার করতে হবে। তার জন্য ফোনের সেটিংস>সিকিউরিটি> ফাইন্ড মাই ডিভাইস ওপেন করতে হবে। এই ফিচার কাজ করার জন্য ফোনের লোকেশন অবশ্যই অন থাকতে হবে। শুধু তাই নয়। চাইলে আপনি হারিয়ে যাওয়া ফোনে নতুন পাসওয়ার্ডও দিতে পারবেন অথবা ফোনের সব ডেটা ডিলিট করে দিতে পারবেন।