বিষন্নতা বা ডিপ্রেশন

বিষন্নতা বা ডিপ্রেশন (Depression)

Information তথ্য বাংলা

মনের কস্ট শরীরেও প্রকাশ পাওয়া কে বিষন্নতা বা ডিপ্রেশন (Depression) বলে। শরীরের মতো মনেরও অসুখ হয়। ছোট বাচ্চা দেরও অনেক সময় মনের নানা অসুখ হয়ে থাকে, আমরা ভাবি বাচ্চাদের আবার মনের অসুখ কি? কোভিড ১৯ এর জন্য পুরো পৃথিবীটার মানুষের মনের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে বাচ্চারা দীর্ঘ ১৮ মাস বাসায় বন্দী থেকে হাপিয়ে উঠেছে, কিন্তু বড়দের সাথে পার্থক্য হলো, বড় রা মন খারাপ হলে শুয়ে বা বসে থাকে আর বাচ্চারা বেশি বেশি এক কাজ করে যেমন: চুপচাপ থাকা, টিভি দেখা, ভিডিও গেমস খেলা, বা ইন্ডোর গেমস খেলা, কার্টুন দেখা।

বিষন্নতা সাধারণত ৩ ধরনেরঃ মাইল্ড, মডারেট, ও সিভিয়ার

মাইল্ড হলে এক্টু চেস্টা আর সচেতনতায় সে বের হয়ে আস্তে পারে কোন রকমেরে ঔষুধ ছাড়াই। মাইল্ড বা মডারেট হলে কাউন্সেলিং এর পাশাপাশি ঔষুধ খেতে হতে পারে। সাথে অবশ্যই সেল্ফ মটিভিশন এ থাকতে হবে।

বিষন্নতার লক্ষণঃ

১) মন খারাপ হয়ে থাকা

২) মেজাজ খিটমিট করা, চিতকার করা, মেজাজ দেখানো, কান্না কাটি করা বা অল্পতেই কান্নাকাটি করে বলা তাকে দিয়ে কিছু হবে না

৩) কোন কাজে উৎসাহ না পাওয়া

৪) সারাক্ষণ ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে আসা

৫) ঘুম থেকে বার বার উঠে যাওয়া

৬) মাথা ব্যাথা, চোখ ব্যাথা, সারা শ রীরে ব্যাথা, জ্বালা পোড়া, চুল উঠে যায়, চোখের নীচে কালি, মুখে ব্রন, চেহারার উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া

৭) ঘুম না হওয়া বা অতিরিক্ত ঘুমান কিন্তু ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস ফিল না করা

৮) খেতে না পারা বা অরুচি বা বেশি বেশি খাওয়া

৯) ১০% ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া

১০) কাজে বা পড়াতে মনযোগ দিতে না পারা

১১) হজম না হওয়া, কোসটকাঠিন্ন, বা বার বার পাতলা পায়খানা হওয়া

১২) দৈনন্দিন জীবনে পারসোনাল হাইজিন, যেমন টুথ ব্রাশ, হেয়ার কোমবিং, পোশাক, শাওয়ার নিতে অনীহা 

১৩) নিজেকে ভর্তসনা করা, নিজেকে সব কিছুর জন্য দায়ী ভাবা

১৪) একাডেমিক বা এডুকেশন পারফরম্যান্স খারাপ হওয়া

১৫)  জীবন সমপর্কে নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা

১৬) ল্যাব রিপোর্ট এ সব নরমাল পাওয়া অথচ রোগীর শ্বাস কস্টের জন্য অক্সিজেন লাগছে, বুক ব্যাথা কিন্তু ইসিজি, ইকো রিপোর্ট নরমাল

১৭) সব কিছু ভুলে যাওয়া

১৮) নিজেকে বদ্ধঘরে আবদ্ধ করা বা কারও সঙ্গে না মিশা

১৯) সুইসাইডের পরিকল্পনা বা আইডিয়েশন

২০) পরিবারের বা বন্ধুদের সাথে সমপর্ক খারাপ হওয়া

আমাদের দেশের ১৬% রোগী মানসিক রোগী, তার মধ্যে ১% সিভিয়ার, বাকী ১৫% মাইল্ড টু মডারেট।

চিকিৎসাঃ

১) সেল্ফ মোটিভেশন

২) সেল্ফ কেয়ার

৩) কাউন্সেলিং

৪) প্রান খুলে হাসুন, হাসতে শিখুন

৫) ফলো আপ

৭) দম ধরে রাখুন, ফ্রেস বাতাস গ্রহণ করুন, ছাড়ুন কালো বাতাস, ভাবুন এবং করে দেখুন

৮) সব সময় সব কিছুতে কৃতজ্ঞতা জানান, খুশি হয়ে সৃষ্টিকর্তকে ধন্যবাদ জানান

৯) মিউজিক থেরাপি যেমনঃ বিরহের গান নয়, আনন্দের গান শুনুন, নাচুন

১০) নিজের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করুন, আমি ভালো আছি, আমার নিজেকে নিয়ে আমি খুব সুখী আছি, এসব কথা নিজেকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলুন

১১) কমেডি মুভি দেখুন না মজার কোন মুভি দেখুন

১২) প্রতিদিন আলো বাতাস গায়ে লাগান,প্রকৃতির সাথে কিছুটা সময় কাটান

১৩) ভালো বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারুন, বাইরে ঘুরতে যান বা খেতে যান

১৪) নতুন কিছু শিখুন

১৫) হাটুন, দৌড়ান, বা সাইক্লিং করুন

১৬) অল্প কিছু হলেও অন্যের জন্য কিছু করুন

১৭) মা, বাবা, সন্তান, ওয়াইফ বা বন্ধুদের হাগ করুন, টাচ থেরাপি, কাওকে না পেলে নিজেই নিজেকে বলুন আমি আমাকে অনেক ভালোবাসি, এসব কিছু নিয়ে আমি গর্বিত, আমি একজন পরিপুর্ন সুখী মানুষ।

১৮) ঘুম, খাওয়া আর নিজের যত্ন নিয়মিত ভাবে করুন

১৯) প্রার্থনা করুন নিয়মিত ভাবেই

প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সরনাপর্ণ হবেন, এবং নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।