আধার কার্ড এখন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। আধার কার্ডের সবচেয়ে বড় গুরুত্ব হল জাতপাত, ধর্ম, ভৌগলিক অবস্থানের প্রেক্ষিতে কখনওই ভেদাভেদ করা হয় না। আধার কার্ড ভারতীয় নাগরিকের ক্ষমতায়ণের পথ। সেজন্য আধার কার্ডের জন্য আবেদন করার সঠিক নিয়ম জানা প্রয়োজন। আমাদের অনেকেরই আধার কার্ড হয়ে গিয়েছে। আবার অনেকে আছেন যাঁরা আধার কার্ড শীঘ্রই বানানোর পরিকল্পনা করছেন। তাই যারা নতুন করে আধার কার্ডের আবেদন করবেন তাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনাটি
জরুরি ডকুমেন্ট জোগাড় করেনিনঃ
আধার কার্ডের আবেদনের প্রথম কাজ ডকুমেন্ট জোগাড় করা। সেই সমস্ত ডকুমেন্ট যেখানে পরিচয়, ঠিকানা ও জন্মতিথি থাকে। আধার কার্ডের জন্য https://uidai.gov.in/ এই ওয়েব সাইট
যেমনঃ
(১) পরিচয় প্রমানের জন্য ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট ইত্যাদি লাগে।
(২) ঠিকানা প্রমানের জন্য ব্যাংকার পাসবুক, ভোটার কার্ড বা পাসপোর্ট ইত্যাদি লাগে।
(৩) জন্ম প্রমানের জন্য হাইস্কলের মার্কশীট, প্যান কার্ড ইত্যাদি ডকুমেন্ট লাগবে। এসমন্ত ডকুমেন্ট হলেই আবেদন করা যাবে, আর সেই সঙ্গে আপনার একটি চালু মোবাইল নাম্বার লাগবে

কীভাবে আধার কার্ডের জন্য আবেদন করবেনঃ
👉 ভারতের যে কোনও জায়গায় অনুমোদিত যে কোনও আধার তালিকাভুক্ত কেন্দ্রে আপনার পরিচয় পত্র ও ঠিকানার প্রমাণ পত্র নিয়ে যান।
👉 আপনি যেখানে থাকেন সেখানকার নাম যদি অনলাইন/অ্যাপয়েন্টমেন্ট অ্যাপ্লিকেশন ওয়েবসাইটে না থাকে, তাহলে আপনি আগে থেকে সময় না জানিয়েই কাছের আধার কার্ড কেন্দ্রে চলে যেতে পারেন।
👉 সেখান থেকে বিনামূল্যে আধার কার্ড আবেদনের ফর্ম পাবেন। কিংবা ওয়েবসাইট থেকেও আপনি ফর্ম ডাউনলোড করতে পারেন।
👉 তবে সময় বাঁচানোর জন্য অনলাইনে ফর্ম ডাউনলোড করে তা ভর্তি/পূরণ করে একবারেই আধার কার্ড কেন্দ্রে যাওয়া ভাল। কারণ তাতে সময় বাঁচবে।
👉 নাম নথিভুক্ত করার সময় আপনার ছবি, আঙুলের ছাপ এবং আইরিস স্ক্যান জমা নেওয়া হবে।
👉 নাম নথিভুক্ত করার আগে যে নথি আপনি দিচ্ছেন তা ভাল করে খুটিয়ে দেখে নিন। যদি কোনও কিছু ভুল থাকে তাহলে, তা সঠিক করার প্রয়োজন থাকে তখনই করে নিন।
👉 তথ্য জমা হয়ে গেলে, তখনই আপনাকে অ্যাকনলেজমেন্ট বা স্বীকৃতি স্লিপ দেওয়া হবে। এই স্লিপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আপনি যতক্ষণ না আধার কার্ড পাচ্ছেন। এমনকী আধার কার্ড পাওয়ার পর সেটি হারিয়ে গেলেও এই স্লিপটি তখন কাজে লাগবে।
👉 আপনাকে আধার কার্ড দেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় স্তরে আপনার প্রদানকৃত সব তথ্য খতিয়ে দেখা হবে।
👉 ভেরিফিকেশান-এ সমস্যা না থাকলে এস.এম.এস বা ইমেলের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এর কয়েকদিন পরেই আধার কার্ড ডাক মারফত আপনার দেওয়া ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

আধার কার্ডের আবেদনের জন্য যোগ্যতাঃ
👉 যে কোনও ভারতীয় নাগরিক, প্রবাসী ভারতীয় বা বিদেশি যাঁরা ভারতে এখন বসবাস করছেন তাঁরা আধার কার্ডের জন্য আবেদন জানাতে পারেন।
👉 যে কোনও বয়সের যে কোনও ব্যক্তি আধার কার্ডের জন্য আবেদন জানাতে পারেন।
👉 ৩ বছর বয়সের কম শিশুদের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক তথ্যের কোনও প্রয়োজন নেই এবং এক্ষেত্রে আধার মা-বাবা বা অভিভাবকের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হবে। ওই শিশুর ৫ বছর হলে তার বায়োমেট্রিক তথ্য় নেওয়া হবে।
👉 ৫-১৫ বছর বয়েসের ক্ষেত্রে নাম নথিভুক্ত করতে গেলে ৫ বছর বয়সে একবার বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়া হবে আবার তার ১৫ বছর বয়স হলে আবার নেওয়া হবে।
কী কী নথি প্রয়োজনঃ
👉 পরিচয় প্রমামপত্র হিসাবে (যে কোনও একটি) ফটো আইডি কার্ড, রেশন কার্ড, পাসপোর্ট, প্যান কার্ড অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স
👉 ঠিকানার প্রমাণ প্রত্র (যে কোনও একটি) শেষ ৩ মাসের জল, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিল।
অন্যান্য তথ্যঃ
👉 যদি কারোর কাছে পরিচয়পত্র বা ঠিকানার প্রমাণপত্র না থাকে তাহলে পরিবারের মাথার উপর যিনি আছেন (পরিবার প্রধান) তার সঙ্গে আপনার সম্পর্কের প্রমাণপত্র দিলেই হবে।
👉 উদাহরণ-স্বরূপ বার্থ সার্টিফিকেট, পিডিএস কার্ড, এণএনআরএডিএ জব কার্ড, ইএসআইসি মেডিক্যাল কার্ড, পেনশন কার্ড, ম্যারেজ সার্টিফিকেট ইত্যাদি।
কতদিনে পাবেনে আপনার আধার কার্ডঃ
👉 সাধারণত আধার কার্ডের পক্রিয়া সম্পন্ন হতে ৬০ থেকে ৯০ দিন লাগে। যদিও তথ্য যাচাই পক্রিয়ার জন্য এই সময় বেশিও লাগতে পারে।
👉 তথ্য যাচাইয়ের সময় কিছু ভুল ধরা পড়লে যতটা সম্ভব ঠিক করা হয়। না হলে আবেদনকারীর কাছে আবেদন বাতিল করা হয়েছে বলে একটি চিঠ যায়। এবং নতুন করে আবেদনকারীকে আবেদন করতে বলা হয়।
👉 ভারতীয় ডাকের উপর দায়িত্ব রয়েছে আধারের চিঠি ছাপিয়ে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌছে দেওয়া। এই পক্রিয়াতে আরও ৩-৫ সপ্তাহ বেশি লাগে।