বর্তমানে আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোনটি যে কোনো মুহূর্তে হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনার মোবাইল ফোনটি হ্যাক হয়েছে? মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন অথচ হ্যাকিংএর কথা শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ফোনে আড়ি পাতায় আলোচনা সমালোচনার ঘটনাও কম নয়। ফোন হ্যাকের মাধ্যমে তথ্য চুরিতে সমস্যায় পড়েছেন এমন মানুষও নেহাত কম নয়। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনার মোবাইল ফোন হ্যাক হয়েছে কি না?
ফোন ধীরগতির/স্লোঃ
স্মার্টফোন স্লো বা ধীর গতির হয়ে যাওয়াটাও উদ্বেগের কারণ হতে পারে। তাই যখন মনে হবে স্মার্টফোন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক স্লো কাজ করছে, তখনই চেক করার চেষ্টা করুন ফোনের ভেতর কোনো ম্যালওয়্যার আছে কিনা।
গ্যালারিতে অপরিচিত ছবি কিংবা ভিডিওঃ
আপনার ফোনে যদি এমন ছবি কিংবা ভিডিও পাওয়া যায় যেটি ইতোপূর্বে আপনি কখনও ধারণ করেননি, সেটিও হতে পারে আপনার ফোনে হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যারের উপস্থিতির আরও একটি কারণ। হয়তো-বা হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে আপনার অজান্তে কেউ দূর থেকে আপনার ফোনের ক্যামেরাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
অতিরিক্ত ডাটা খরচঃ
আপনি ফোন অপারেটরের থেকে ডাটা কিনেছেন, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে যদি কেনা ডাটার সীমা শেষ হয় তাহলে সেটিও হতে পারে উদ্বেগের বিষয়। ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপের উপস্থিতির কারণে এমনটি হতে পারে, অনেক ক্ষেত্রে এসব ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপ ব্যবহারকারীর অজান্তে ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে তার অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করতে পারে।
অপ্রত্যাশিত ফোন কল কিংবা মেসেজঃ
আপনার ফোনে এমন কোনো নম্বর থেকে ফোন কল কিংবা টেক্সট মেসেজ পেয়ে থাকেন, যেটা গতানুগতিক আপনার পরিচিত কোনো নম্বর থেকে একেবারে ভিন্ন, তাহলে সেটিও হতে পারে ভীষণ উদ্বেগের কারণ। এ ছাড়া আপনার ইনবক্সে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ও অস্বাভাবিক কোনো বার্তার উপস্থিতিও আপনাকে ফাঁদে ফেলতে পারে।
ফোন অতিমাত্রায় গরম হচ্ছেঃ
দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহার করলে বিশেষত একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে গেমস খেললে, কিংবা নেভিগেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করলে ফোন গরম হয়ে ওঠে। এটা নিতান্ত স্বাভাবিক ঘটনা। যদি ফোন ব্যবহার না করার পরও সেটি গরম হয়ে ওঠে, তবে তা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যারের উপস্থিতির কারণে এভাবে ফোন ব্যবহার না করার পরও গরম হয়ে উঠতে পারে।
ফোনের ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হারায়ঃ
হ্যান্ডসেটের ব্যাটারিতে কোনো সমস্যা না থাকার পরেও যদি স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত চার্জ হারায়, তাহলে বুঝতে হবে ফোনের ভেতরে সক্রিয় অবস্থায় কোনো ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো অ্যাপ রয়েছে। আর এজন্যই ফোনের ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হারাচ্ছে। ফোন ব্যবহার না করলেও এসব ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপ সক্রিয় থেকে যায়। এজন্য প্রথমে ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করতে হবে এবং জানার চেষ্টা করতে হবে নির্দিষ্ট কোনো মুহূর্তে কতগুলো অ্যাপ কার্যকর অবস্থায় রয়েছে। একসঙ্গে যদি একাধিক অ্যাপ চলমান থাকে তাহলে দ্রুত ফোনে ব্যাটারি চার্জ হারায়। এ কারণে কোনো অ্যাপ ব্যবহার করার পর সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করে দিতে হবে। পাশাপাশি ম্যালওয়্যার চেক করার জন্য বিভিন্ন সিকিউরিটি প্রোগ্রামও রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে ফোনে ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো অ্যাপের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়।
ফোনে অপরিচিত অ্যাপঃ
ফোনে ডাউনলোড করা অ্যাপ নিয়মিত চেক করতে হবে। ফোনে যদি এমন কোনো অ্যাপ থাকে যা আপনি ডাউনলোড করেননি কিংবা এমন কোনো অ্যাপ দেখা যাচ্ছে যা অপরিচিত, তাহলে সেটি হতে পারে কোনো এক হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যার।
সন্দেহ জনক পপ-আপঃ
যদি ফোনে একের পর এক পপ আপ বিজ্ঞাপন আসতে থাকে, আর সেখানে হাত পড়ে তাহলেই সমস্যায় পড়বেন। ফোনে বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়ার বা ক্ষতিকর সফ্টওয়ার থাকলে এই ধরনের অযাচিত ও ক্ষেত্রবিশেষে অশ্লীল পপ আপ বিজ্ঞাপন আসতে পারে।
.
