ইন্টারনেট দরকারি, মজার ও অদ্ভুত সব তথ্যের উৎস। আয়-রোজগার, কেনাকাটা বা যোগাযোগের জন্য এ প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। অনেক সুযোগ-সুবিধা পেলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিপদে পড়তে পারেন। বেশির ভাগ সময় আপনার অসতর্কতা এর জন্য দায়ী। সহজেই খারাপ লোকেরা আপনার তথ্য হাতিয়ে নেয়। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। অনলাইনে নিরাপদ থাকার জন্য নিজের বিচক্ষণতাকে অবশ্যই প্রধান্য দিতেহবে সেই কারণে, অনলাইনে নিরাপদ থাকার উপায় ও বের করতে হবে।
অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহারঃ ভাইরাস বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কম্পিউটারের গতি কমিয়ে দিতে পারে এমনকি অচলও করে দিতে পারে। ভায়াগ্রা, পর্ন অথবা ফিশিং ইমেইল সহ নাম না জানা বিভিন্ন ধরনের ইমেল আসতে পারে। এই সব মেইলে ক্লিক করলে আপনার অজান্তেই ব্যবহৃত ওয়েবসাইটে আক্রমণ করতে পারে এবং আপনার ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার, রেকর্ড বা রিপোর্ট সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিতে পারে। তাই অবশ্যই আপনার কম্পিউটারকে ভাইরাসমুক্ত রাখুন। সে জন্য অবশ্যই ভালো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।

পাসওয়ার্ড কাউকে না দেওয়াঃ ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে পাসওয়ার্ড। বর্তমানে অধিকাংশ স্প্যামারই এই পথ ব্যবহার করে থাকেন। অনেক সময় দেখা যায়, অনলাইনে গেম খেলার জন্য কোনো সাইটে ঢুকতে চাইলে পাসওয়ার্ড চাওয়া হয়। পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেললেন তো বিপদে পড়লেন। এর ফলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ডকুমেন্ট চুরি হতে হয়ে যেতে পারে। আপনার ইমেইল, ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড অন্য কাউকে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। সে ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় কোন ওয়েবসাইটের যদি রেজিষ্ট্রেশিন করার প্রয়োজন হয় সেক্ষেতে আপনারা গুরুত্বপূর্ণ পাসওয়ার্ড দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
গুগল ক্রোম ব্যবহারঃ অ্যান্টিভাইরাস না থাকলেও ব্রাউজার হিসেবে গুগল ক্রোম বেছে নিতে পারেন। বর্তমানে গতিশীল ও নিরাপদ ব্রাউজার হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়। অথবা বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন।
মেইলে আসা লিংকগুলোতে ”ক্লিক” না করাঃ ইমেইলে আসা অপরিচিত লিংকগুলোতে ক্লিক করবেন না। সেখানে বিভিন্ন অফার দিয়ে কৌশলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়। এতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

অ্যান্টিভাইরাস আপডেট রাখাঃ সব ধরনের ভাইরাসকে রুখবে এমন কোনো অ্যান্টিভাইরাস নেই। কিন্তু প্রতিদিন নতুন নতুন ভাইরাস সৃষ্টি হচ্ছে। তাই এগুলো প্রতিরোধ করতে অ্যান্টিভাইরাসেরও মজবুত হওয়া দরকার। তাই নিয়মিত অ্যান্টিভাইরাসটি আপডেট করতে হবে।
পাবলিক সাইটে ব্যক্তিগত তথ্য নয়ঃ কোনো পাবলিক পোস্ট, ব্লগ কমেন্টে অনেকে ব্যক্তিগত ইমেইল ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দিয়ে থাকেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে স্প্যামাররা মেইলে স্প্যাম পাঠাতে শুরু করে। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত কল আসতে পারে।
অপরিচিত কারো অ্যাটাচমেন্ট না খোলাঃ মেইলে অপরিচিত অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো অ্যাটাচমেন্ট পাঠালে সেটি খোলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস আক্রমণের একটি পরিচিত পথ এটি। অ্যাটাচমেন্ট খোলার সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটার এবং মেইলের সব সংরক্ষিত কনট্রাক্টে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে আপনার অজান্তেই। সে ক্ষেত্রে অপরিচিত কারো অ্যাটাচমেন্ট খুলবেন না।
ফায়ারওয়াল ব্যবহার করাঃ কম্পিউটারের তথ্য নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ফায়ারওয়াল ব্যবহার করতে পারেন।

দিন দিন অনলাইনে কেনাকাটা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং আমরা ঘরে বসে আমাদের পছন্দের পণ্যটি কিনতে বেশি অগ্রহ দেখাচ্ছি। সেক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন করাটাও জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে। আপনি আপনার কার্ডের সকল তথ্য আপনার অজান্তেই অন্যের নিকট প্রকাশ করছেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ সতরকর্তা অবলম্বন করতে হবে।
কেবল অনলাইনেই নয় বাস্তব জীবনেও নিরাপদ থাকতে হবে। লোকজন আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যত বেশি জানবে, আপনাকে টার্গেট করা তত সহজ হবে। কেবল সহিংসতাই নয়, হ্যাকিং ও ভাইরাসের মাধ্যমেও আপনি আক্রান্ত হতে পারেন